নিজস্ব প্রতিনিধি— বৃষ্টি থেমে গেলেও অসমের প্রায় বেশিরভাগ অংশ এখনও জলের তলায়। একই অবস্থা কাজিরাঙা অভয়ারণের। এর ফলে সেখানে বসবাস করা বন্যপ্রাণীদের অবস্থাও অত্যঙ্ক সঙ্কটে। সাম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল প্রাণের তাগিদে জলের তোড়ে ভেসে আসতে একপাল হরিণকে। এবার প্রাণ বাঁচাতে গৃহস্থের বিছানায় দেখা গেল রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে। যা দেখে বর্তমান পরিস্থিত সম্পর্কে আতঙ্কিত স্থানীয় থেকে শুরু করে গোটা দেশ!
জানা গিয়েছে, কাজিরাঙার প্রায় ৯০ শতাংশ বনই জলের তলায় চলে গেছে। ৪৩০ বর্গ কিলোমিটার জমিতে অনেকটা উপর দিয়ে বইছে বন্যার জল। কোথাও কোথাও এই বন্যার জল ৩ ফুট পর্যন্ত উঠে গিয়েছে। ১৯৯টি অ্যান্টি-পোচিং ক্যাম্পের মধ্যে ১৬৯টি ক্যাম্পই এখন জলের তলায়।
Some will be lucky. A team of wildlife rescuers get hold of a #Rhino calf in Kaziranga. In the time of disasters. Courtesy WA. pic.twitter.com/d2xqbK1QuG
— Parveen Kaswan, IFS (@ParveenKaswan) July 16, 2019
বৃহস্পতিবার আসামের কাজিরাঙ্গা অভয়ারণ্য লাগোয়া জাতীয় সড়কের পাশে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে বাঘটি। সেটা দেখে ভয় পেয়ে যান স্থানীয়রা। সে সময় যদিও বাড়ির মালিক উপস্থিত ছিলেন না। তবে এলাকায় বাড়ির মালিক পৌঁছানোর আগে লোকমুখে গ্রামে বাঘ ঢোকার কথা রটে যায়। খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরে। বনকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বাড়ির ভিতরে বাঘ ঠিক কী অবস্থায় রয়েছে, তা দেখতে ড্রোনের সাহায্য নেন বনকর্মীরা। তাতে দেখা যায়, ওই বাড়ির বিছানার উপর দিব্যি আরাম করছে বাঘটি। দেখে মনে হচ্ছিল জল থেকে উঠে এসে বাড়িতে ঢুকে যেন বেশ নিশ্চিন্ত হয়েছে সে।
#Disaster strikes all !!
A desperate family of deers in #Kaziranga looking for shelter in human habitats. Lost in the water. WA. pic.twitter.com/OnYGgOuNaa
— Parveen Kaswan, IFS (@ParveenKaswan) July 17, 2019
এদিকে, ওই বাড়ি থেকে বের হতে রাজি নয় নাছোড়বান্দা বাঘটি। তাকে উদ্ধার করতে বেশ বেগ পেতে হয় বনকর্মীদের। বাধ্য হয়ে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়েন বনকর্মীরা। তারপর বেহুঁশ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বাঘটিকে। ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে ছবিটি টুইট করা হয়। মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় ছবিটি। সেটা দেখে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মন্তব্যও উঠে আসে। কেউ বলছেন, বাঘটিকে দেখে মনে হচ্ছে সে বেশ ক্লান্ত। আবার কেউ বলছেন, এতদিন খাবার না পেয়ে অসহায় হয়ে গেছে বাঘটি। সে কারণে বাধ্য হয়ে বাড়িতে খাবারের খোঁজে এসেছে সে। কেউ কেউ আবার বলছেন, কাজিরাঙ্গা অভয়ারণ্য কর্তৃপক্ষের বিপন্ন বন্যপ্রাণীকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা উচিত। না হলে হয়ত পশু মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশই বাড়বে।