নিজস্ব প্রতিনিধি— অশান্তি মেঘ গুনচ্ছে কাশ্মীর। ইতিমধ্যেই অমরনাথ যাত্রা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এরপর মাচিলযাত্রাও স্থগিত করল প্রশাসন। ইতিমধ্যে বালতাল থেকে ৩৬৩ জন যাত্রীকে জন্মুতে নিরাপদে ফিরত পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এরপর থেকে সিঁদুরে মেঘ দেখছে জন্মু-কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ। তাঁরা আন্দাজ করছেন বড় কিছু একটা হতে চলেছে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সফরের পরেই গত ২৫ জুলাই জম্মু ও কাশ্মীরে মোতায়েন হয়েছেন ১০০ কোম্পানি অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজার অতিরিক্ত আধা সামরিক বাহিনী। এরপরেই সেই সন্দেহটা আরও জোরালো হয়েছে।
নাশকতার আন্দাজ নিয়ে ইতিমধ্যেই নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ। মুদিখানার জিনিসপত্র থেকে শুরু করে নানান খাবারদাবার, জ্বালানি সবই ঘরে মজুত রাখছেন তাঁরা। নিত্য প্রয়োজনীয় কোনও জিনিস যেন বাদ না থেকে যায় থেকে সে দিকে কড়া নজর রয়েছে গৃহকর্তা এবং কর্ত্রীদের। লম্বা লাইন লেগেছে এটিএম-এর বাইরেও। যাই হোক না কেন, টাকার বন্দোবস্ত তো রাখতেই হবে।
টুইট করে পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা মুফতিও লিখেছেন, “শ্রীনগরের রাস্তায় লোকজন ছুটে বেড়াচ্ছে। পেট্রল পাম্প, এটিএম-এ লাইন দিচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস জোগাড় করছে। ভারত সরকার কি কেবল অমরনাথের যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। আর উপত্যকার সাধারণ মানুষকে তাঁদের নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদেরকেই করে নিতে হবে?” টুইট করে কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওমর আব্দুল্লাও। তিনি লিখেছেন, “পহেলগাঁও এবং গুলমার্গের হোটেল থেকে জোর করে পর্যটকদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। সরকারি বাসে চাপিয়ে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। যদি অমরনাথ যাত্রার ক্ষেত্রেই কেবল নাশকতা আশঙ্কা থাকে তাহলে এই জায়গাগুলো খালি করে দেওয়া হচ্ছে কেন?”
পাশাপাশি উপত্যকায় আসলে কী হতে চলেছে তা নিয়ে রাজ্যপালই বা প্রকাশ্যে স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ওমর আবদুল্লা। অমরনাথ যাত্রায় নাশকতার ছক ছিল, এ কথা ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রকাশ্যে আনার পরেই শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা, শাহ ফয়জল, ইমরান আনসারি, সাজ্জাদ লোনের মতো নেতারা। বৈঠকে রাজ্যপাল সত্য পাল মালিক জানান, নিরাপত্তার বিষয়ের সঙ্গে অন্যান্য প্রসঙ্গ টেনে কেবল আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে জম্মু ও কাশ্মীরে। পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্ত রাজনৈতিক নেতাদের কাছে রাজ্যপাল আবেদন জানিয়েছেন, তাঁরা যেন গুজবে কান দিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হন। বরং উপত্যকায় শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করেন।