নিজস্ব প্রতিনিধি : একটা সময়ে তাঁকে ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলে একাধিক বার সম্মোধন করতেন তিনি। কিন্তু সেই মা-কেই এ বার মেদিনীপুরের মাটিতে ভোটের প্রচারে নেমে ‘কৈকেয়ী’ বলে ইঙ্গিত করলেন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ।
আগে থেকেই ঠিক ছিল, সোমবার থেকে প্রচারে নামবেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতীদেবী। সেই মতো এ দিন সকালেই তিনি পৌঁছে যান ডেবরাতে। সেখানে একটি গেস্ট হাউসে দলীয় কর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক সারেন। সঙ্গে ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
একটা সময়ে তিনি তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলতেন। এখন সেই মমতার দলের বিরুদ্ধেই তিনি প্রার্থী! ডেবরাতে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন একটুও অপ্রতিভ করেনি ভারতীকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিতর্কিত প্রাক্তন পুলিশ সুপার জবাব দিলেন, “এটা তো অনেক পুরনো প্রশ্ন! আজকের দিনে তো এ প্রশ্ন অর্থহীন। মা তো অনেক রকমের আছেন। কৈকেয়ীও মা ছিলেন।” যদিও তার পরেও প্রশ্ন পিছু ছাড়েনি বিতর্কিত ওই প্রাক্তন আইপিএসের। তাঁকে প্রশ্ন করা হয় পিংলার বিস্ফোরণ এবং সবংয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু নিয়ে। সে সব প্রশ্ন শুনে সামান্য থেমে ভারতী জবাব দিয়েছেন, “এক জন এসপি হিসাবে যে ভাবে মোকাবিলা করা দরকার, সেই ভাবেই করেছি।”
কালো সাদা প্রিন্টেড সালোয়ার কামিজে চেনা ভারতী ঘোষকে এ দিন অচেনা ঠেকেছে দলীয় কর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয়দের অনেকেরই। এক সময় খাকি বা জংলাছাপ উর্দিতে পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে দাপিয়ে বেড়াতে দেখেছেন এই এলাকার মানুষ। কিন্তু সেই ভারতী আর এই বিজেপি প্রার্থী— আচরণে রয়েছে অনেক ফারাক। এ দিনের কর্মীসভায় তিনি অভিযোগ করেন, গত পাঁচ বছরে গোটা ঘাটাল সংসদীয় কেন্দ্র কিছুই পায়নি। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল সরকার দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। আমি কথা দিতে পারি, যদি মানুষ আমাকে জেতায় তা হলে আমি ২৪ ঘণ্টা ঘাটালের জন্য থাকব।”
এই কেন্দ্রে তাঁর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী দেবকে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতী বলেন, “দেব মানুষ হিসেবে খুবই ভাল। আমার ছোট ভাইয়ের মতো। এটা রাজনৈতিক মোকাবিলা। এই লড়াই রাজনৈতিক ময়দানেই সীমাবদ্ধ রাখব।”
কর্মীসভা শেষ করে মাদপুরের বিখ্যাত মনসা মন্দিরে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুজো দিতে যান ভারতী। মন্দিরে পুজো দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি আমার আইনজীবীকে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে অভিযোগ জানাতে নির্দেশ দিয়েছি। আমার মোবাইল ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে। আমি এই লোকসভা ভোটে এক জন প্রার্থী। আমার ফোনে আড়ি পাতাটা খুব অনৈতিক। তাই আমি অভিযোগ জানিয়েছি। মু্খ্য নির্বাচন কমিশনারের অফিসেও অভিযোগপত্র পাঠানো হবে।”