নিজস্ব প্রতিনিধি— আসন্ন নির্বাচনে তৃণমূলের প্রচার সভায় প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতি কতটা থাকবে তা জানা যাবে আজ সোমবার। কারণ আজ সোমবার বেহালার দু’টি বিধানসভা এলাকার যৌথ কর্মিসভা রয়েছে। তবে এদিনের সভায় তিনি থাকছেন কি না তা নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দক্ষিণ কলকাতার কর্মীদের মধ্যে। অন্তত নিজের এলাকায় তিনি দলের কাজে নামবেন কি না সেটাও আজ স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেই তাঁদের ধারণা। এর আগে মেয়র পদে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে দলের কোনও কর্মসূচিতেই আর দেখা যায়নি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। এমনকি ১৭ মার্চ নজরুল মঞ্চে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভার কর্মিসভাতেও ছিলেন না বেহালা পূর্বের বিধায়ক শোভন।
শরৎ সদনে অনুষ্ঠিত এই কর্মিসভায় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব বেহালা পূর্ব ও পশ্চিমের কর্মীদের বিশেষ বার্তা দিতে চলেছেন। একই সঙ্গে একেবারে নীচুস্তরে দীর্ঘকালীন বিবাদ লেগে থাকলে কোনও এলাকার সংগঠনে এবং কর্মীদের মনে নানা বিভ্রান্তি তৈরি হয়। ভোটে নামার আগে বেহালায় সেই অবস্থাটাই মেরামত করতে চাইছে শাসকদল। এই কর্মিসভায় আসার জন্য শোভন-ঘনিষ্ঠ জনা চারেক কাউন্সিলর তাঁকে অনুরোধ করেছেন। সাধারণত তাঁরাই প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখেন বিধায়কের সঙ্গে।
বেহাল পূর্বের বিধায়ক শোভনবাবু গত দেড় বছর ধরে বেহালায় থাকছেন না। এখন তিনি বেহালার বাড়ি থেকে গোলপার্কের একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন। এমনকি তিনি নিজের বিধানসভা এলাকা বেহালা পূর্বেও আসেন না বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন নিজের বিধানসভা এলাকায় অনুপস্থিত থাকার ফলে দলের কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি এলাকার বিধায়কের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের প্রকাশ্য বিবাদ দলকেও যথেষ্ট বিড়ম্বনায় ফেলেছে।
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনের পরিসংখ্যান বলছে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বেহালা পূর্ব ও পশ্চিম বিধানসভায় তৃণমূলের ভোটক্ষয় তাদের যথেষ্ট চিন্তার কারণ হতে পারে। ২০১১-য় বেহালা পূর্ব আসনে ৪৮,২৭১ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু ২০১৬-তে সেই ব্যবধান নেমে আসে ২৪,২৯৪-এ। অপরদিকে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে ২০১১-য় তৃণমূল এখানে ৫৯০২১ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিল। কিন্তু ১৬-র বিধানসভায় সেই ব্যবধান নেমে এসেছিল মাত্র ৮,৮৯৬-এ। গত বিধানসভায় বিজেপি দুটি আসন মিলিয়ে প্রায় ৪১ হাজার ভোট না-কাটলে বাম-কংগ্রেস জোটের দৌলতে বেহালার ফলাফল অন্য রকম হতেই পারত।