নিজস্ব প্রতিনিধি : ভারী বর্ষণে বন্যার কবলে অসম, বিহার-সহ দেশের কয়েকটি অংশ। বানভাসি প্রতিবেশী নেপাল ও বাংলাদেশও। তিন দেশে এখনও পর্যন্ত বন্যার কারণে মৃত্যু হয়েছে শতাধিক মানুষের। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। ক্রমাগত বৃষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার জেরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশের মধ্যে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ অসম ও বিহারে। অসমের বন দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের প্রায় ৯৫ শতাংশ এলাকাই এখন জলের তলায়। বিগত দু’দিনে কাজিরাঙায় অন্তত ১৭টি বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যের প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর কৃষি জমি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র-সহ রাজ্যের ১১টি নদীর জল এখন বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বন্যা কবলিত এলাকা থেকে প্রায় ৮৩ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। বন্যা দুর্গতদের জন্য রাজ্যে ১৮৩টি ত্রাণশিবির গড়ে তোলা হয়েছে।
বিপন্ন প্রাণীরা পার্শ্ববর্তী কার্বি আংলং জেলায় তুলনায় কিছুটা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে রাস্তা পার হতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় সাতটি হরিণের মৃত্যু হয়েছে। ৩৩টি জেলার মধ্যে বর্তমানে ২৮টি বন্যাকবলিত। এর জেরে ২৬ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন মোট ৩২৭টি ত্রাণ শিবিরে। বন্যার জেরে নষ্ট হয়েছে ৮৭,৬০৭ হেক্টর জমির ফসলও। অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়ালকে ফোন করে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে খবর নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
Assam: Water level of Brahmaputra river rises after incessant rainfall; around 200 villages affected in Morigaon. pic.twitter.com/Q3XYEvi36Y
— ANI (@ANI) July 15, 2019
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর বিহারের পরিস্থিতি সব থেকে খারাপ। শেওহর, সীতামারি, পূর্ব চম্পারণ, মধুবনী, আরারিয়া, কিষাণগঞ্জ, সুপোল এবং দ্বারভাঙা জেলার প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষ বন্যাকবলিত। নেপালে বৃষ্টি না থামায় পরিস্থিতি ক্রমে জটিল হচ্ছে। এর মধ্যে আরারিয়া জেলায় এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বন্যাকবলিত এলাকাগুলি আকাশপথে পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। পরে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দেন।
বন্যায় বিপর্যস্ত নেপাল ও বাংলাদেশও। বন্যার কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রাণহানি ও শস্য নষ্ট হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। ২০১৭ সালের বর্ষায় ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যায় কমপক্ষে ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।