নিজস্ব প্রতিনিধি— বাংলায় সুষ্ঠ এবং অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে ভোটের বহু আগে আজ শুক্রবার রাজ্যের আসছে ৯ কোম্পানী কেন্দ্রীয় বাহিনী। যেহেতু বিরোধীরা বরাবরই দক্ষিণ ২৪ পরগণাকে অতিস্পর্শকাতর হিসেবে দাবি করেছে, তাই এই ১০ কোম্পানির মধ্যে ২০০ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পাঠানো হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলাতে। এছাড়া ২০০ কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে উত্তর ২৪ পরগণাতে। এছাড়া মালদা, মুর্শিদাবাদ জেলাতে ১০০ করে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। উত্তর দিনাজপুর, কলকাতাতেও ১০০ আধাসেনা থাকবে। আগামীকাল শনিবার থেকে বিভিন্ন জেলাতে চলবে রুট মার্চ এবং এরিয়া ডোমিনেশনের কাজ। চলবে মন্দিরবাজার এবং ঝাড়খণ্ড এলাকা সীমান্তে টহলদারির কাজও।
এদিকে, আগামী ১১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোটের প্রথম দফার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আসছে ১২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। তিনটি পর্যায়ে তাদের রাজ্যে আনা হবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। একই সঙ্গে, আগামিকাল শনিবারই রাজ্যে আসছেন উপ নির্বাচন কমিশনার। সঙ্গে আসছে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করবেন তাঁরা।
সূত্রটির দাবি, প্রথম দফার মনোনয়ন পেশ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার ছাতার তলায় চলে আসবে সংশ্লিষ্ট এলাকা। পরে ধাপে ধাপে মোট ১২৫ কোম্পানি বাহিনী চলে আসবে রাজ্যে। এর মধ্যে ১৫ কোম্পানি বাহিনীকে রেখে দেওয়া হবে ‘স্ট্রং রুম’ ও গণনা পর্বের নিরাপত্তার জন্য। এবার বুথ সুরক্ষার সম্পূর্ণ দায়িত্ব থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর। জেলা প্রশাসনগুলিকেও সেকথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূলত বুথ ও বুথের আশপাশের ১০০ মিটারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। এক্ষেত্রে ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে যেভাবে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল এবারও তাইই থাকছে। সূত্রের খবর, যেসব নির্বাচনী কেন্দ্রে একটি মাত্র বুথ রয়েছে সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে দু’জন আধাসেনা মোতায়েন রাখা হবে। দু’টি বুথ রয়েছে এমন কেন্দ্রে মোতায়েন করা হবে তিন জন আধা সেনার জওয়ান। এছাড়ও যেসব ভোট কেন্দ্রে দুয়ের অধিক বুথ থাকবে সেখানে সর্বোচ্চ পাঁচ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান থাকবেন নিরাপত্তার দায়িত্বে। ১৮ মার্চ মনোনয়ন পেশ শুরুর দিন বা তার আগে প্রথম দফায় ঢুকবে কয়েক কোম্পানি বাহিনী। মনোনয়ন পর্ব মসৃণ করতে তাদের ব্যবহার করা হবে। এরপর ৩ মার্চের মধ্যে ধাপে ধাপে রাজ্যে চলে আসবে মোট ১২৫ কোম্পানি। শুধু ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বেই নয়। ঠিক হয়েছে এরিয়া পেট্রলিং ও ফ্লাইং স্কোয়াড হিসাবে প্রতিটি বিধানসভা পিছু এক কোম্পানি বাহিনী ব্যবহার করা হবে। নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রতিটি দফার জন্য নিরাপত্তা পরিকল্পনা একই থাকবে। যেসব কেন্দ্রে ভোট সেখানে সময়মতো পৌঁছে যাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যে ভোট নিরাপত্তার দায়িত্বে পর্যাপ্ত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও তাদের ব্যবহার করা হয় না। কারণ তাদের পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন রাজ্যের আধিকারিকরাই। ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, এবার তেমনটা হবে না। এবার সরাসরি কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাছ থেকেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত লাইভ আপডেট নেবেন কমিশন কর্তারা। সেজন্য যাবতীয় ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে বলেও জানান তিনি।