নিজস্ব প্রতিনিধি : নন্দীগ্রাম দখলের জন্য খেজুরিতেই হার্মাদরা ঘাঁটি গেড়েছিলেন। আর সেই খেজুরিতে অবস্থিত পাঠাগারেই তারা আশ্রয় নেয়। একদিন বোমা পিস্তলের গোডাউন হয়ে উঠেছিল হিন্দু মিলন মন্দির পাঠাগারটি। দীর্ঘ বার বছর পর সেই পাঠাগার সাধারনের জন্য চালু করা হল।২০৭ সাল থেকে নন্দীগ্রাম দখলের জন্য পাঠাগারটি কার্যত সিপিএমের অস্ত্রশস্ত্র গোডাউন হিসাবে পরিচিত হয়। বন্ধ হয়ে যায় পাঠাগারটি। চলতে থাকে নন্দীগ্রাম আন্দোলন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ১৯৭৮ সালে এই পাঠাগারটি তৈরি হয়। প্রথম থেকে সরকারের তত্ত্বাবধানে চলত এই পাঠাগারটি। খেজুরি ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিমাংশু দাস ছিলেন পাঠাগারের অন্যতম মেম্বার। এলাকার ছাত্রছাত্রীরা ভিড় জমাতে শুরু করে। দিনে দিনে খুব জনপ্রিয়তা লাভ করে পাঠাগারটি। স্কুল কলেজ, ছুটির পর প্রায় ছাত্রছাত্রীরা টাইম কাটাতে এই পাঠাগারে আসতেন। এরপর ২০০৭ সালে রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনা শুরু হল পাঠাগারে। ছাত্র ছাত্রীরা মুখে ফেরাতে শুরু করে পাঠাগারে থেকে।এরপর শুরু হয় নন্দীগ্রাম আন্দোলন। তৎকালীন গ্রন্থাগারিক সমর কুমার বিশ্বাস অন্য পাঠাগারে বদলি হয়ে যায়। সরকারের উদাসীনতায় বন্ধ হয়ে যায় পাঠাগারটি। চারপাশে ঝোপ জঙ্গলে ঢেকে যায়। ২০০৭ সালের১৪ মার্চ কামারদা থেকে হার্মাদবাহিনী খেজুরি জুড়ে তাণ্ডব চালানো হয়েছিল।পাঠাগারটি সিপিএমের পার্টি অফিসে পরিনত হয়। হার্মাদ ও অস্ত্র কারখানা রুপান্তরিত হয় পাঠাগারটি। আর সেই পাঠাগার থেকে যাবতীয় পরিকল্পনা হত নন্দীগ্রামের মাস্টার স্ট্রোক। আতঙ্কের গ্রামছাড়া হন বহু মানুষ। ২০০৯ সাল থেকে ধীরে ধীরে রাজনৈতিক অবস্থা বদলাতে থাকে। এরপর পুলিশ পাঠাগার থেকে বন্দুক,গুলি,বোমা, উদ্ধার করেন। আস্তে আস্তে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে থাকে এলাকা। দীর্ঘ ১২ বছর পর বর্তমান জেলা গ্রন্থাগার দপ্তরের উদ্যোগে অবসরপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক অধীর রঞ্জন মাইতি ও অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিশ্বনাথ মালিককে পাঠাগারের নিয়োগ করা হয়েছে।দীর্ঘদিন রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে পাঠাগার ভগ্নদশায় পরিনত হয়। অনেক বই উইপোকায় কেটে দিয়েছে। তবুও ১৫০০ বই উদ্ধার করা হয়েছে। এখন মোট ৩০০০ হাজার বই পাঠাগারের রয়েছে। কামারদা হিন্দু মিলন মন্দির পাঠাগারটি ফের চালু হওয়ায় খুশি এলাকার মানুষ থেকে ছাত্র-ছাত্রী সবাই। কামারদা হাই স্কুলের ছাত্র অরূপ মাইতি,অভিজিৎ মাইতি বলেন আমরা ভাবতে পারিনি যে এই পাঠ্যগারটি পুনরায় পাবো। প্রায় এক দশক পর আমরা ফিরে পেয়েছি আমরা আপ্লুত।