নিজস্ব প্রতিনিধি: শহরে এক বিরল রোগের আর্বিভাব। মিল পেরুর সাথে কলকাতায়। প্যারন নামক গ্রামের জিনগত রোগ অন্ধকার নামাল শহরের বুকেও। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর একটি পাহাড়ি গ্রাম প্যারান। ৫০ পার করলেই গ্রামবাসীদের চোখে নেমে আসে অন্ধকার। ক্রমশ চলে যেতে থাকে দৃষ্টি। শেষ পর্যন্ত অন্ধত্ব। তখন একমাত্র লাঠিই ভরসা। বিশেষ করে গ্রামের পুরুষরা বেশি অন্ধত্বের শিকার। এই রোগ জন্মগত। নাম ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’। পেরুর এই পাহাড়ি গ্রামের মানুষের মতোই অতি বিরল রেটিনার রোগে আক্রান্ত কলকাতার এক আইনজীবী। নাম অলোক মাইতি। অলোকবাবু জানালেন, “জন্ম থেকে রোগটা বয়ে বেড়াচ্ছি। অথচ জানতামই না আমি প্রতিবন্ধী। রাতে একা বেরতেই পারছি না। অথচ, সামনের জিনিস দেখতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না।” বছর সাতচল্লিশের অলোকবাবুর জীবনও ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে। ডাক্তাররা অসহায়। কারণ এখনও পর্যন্ত এই জিনগত রোগের কোনও চিকিৎসা নেই। এক্ষেত্রে চোখের ‘পেরিফেরাল ভিশন’ নষ্ট হয়ে যায়।
যদিও পেরুর ওই গ্রামের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই অলোকবাবুর। আগেও কখনও ছিল না। সম্প্রতি এনআরএস হাসপাতাল অলোকবাবুকে প্রতিবন্ধী শংসা পত্র দান করেছে। ৭৫ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে অলোকবাবুর চোখে। জানা গিয়েছে, প্যারনের ৭৫ শতাংশ মানুষ অন্ধত্বের শিকার। সাতটি পরিবার মিলে এই গ্রাম তৈরি করেছিল। যাঁরা সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিল এই রোগ। কয়েক বছর আগে একটি মাইন সংস্থা সোনা-রুপোর খোঁজে হাজির হয় প্যারনে। ডাক্তার আসা শুরু হয় ওই গ্রামে। তখনই ওই অন্ধ গ্রামের কথা বিশ্বের লোক জানতে পারে। শুরু হয় গবেষণা। জানা যায়, এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যা থেকেই এই অন্ধত্ব তৈরি হয়।